বাংলাভাষী শিশুদের আরবী শিক্ষার প্রথম পাঠ: বাস্তবতা, সীমাবদ্ধতা ও সমাধান

Title: First Lessons of Arabic Language to Bengali-Speaking Children: Reality, limitations and solutions

Abu Ahsan Mahmud, M.Phil. Student, University of Dhaka, +8801940763314

Abstract: When children in Bangladesh start institutional education, they are usually made to master two foreign languages in addition to their mother tongue, Bengali. One of them is English; The another is Arabic. The importance of learning English as a widely used international language is equally applicable to everyone. And the main motivation behind teaching Arabic language is religious. Bangladesh is a country of about 88% Muslims. Besides, there are people of other religions including Hindus, Christians and Buddhists. Raising through strong family ties irrespective of caste and religion, every child in this country grows up with a religious obsession. Among them, Muslim families first want to teach their children the main religious book Al-Quran. Not only that, families who do not follow religious rituals and principles they also be careful about teaching the reading skill of religious books to their children. In the light of this motivation, Arabic learning is considered as an important lesson for children. But regrettably, teaching Arabic to a child is not given the same importance as all language skills are taught to a child in English. Not only that, the main point of the religious motivation from which Arabic is taught is to ensure Arabic reading skill. Even if not four language skills like English, only reading skill are not fully acquired by children. The only reason for this is lack of proper lesson plan. However, it is possible to ensure children’s proficiency in the language within the same time frame as conventional teaching of Arabic, if proper lessons can be formulated for children’s Arabic education. This research paper will present the above reality of Arabic teaching to Bengali speaking children and assess the limitations of the said reality. Along with this, the limitations will be logically reviewed and appropriate solutions will be outlined. If a lesson is formulated according to this framework will help children progress toward equal acquisition of the four skills of Arabic language.

ভূমিকা: প্রায় ৮৮% মুসলিম দেশ বাংলাদেশ। তাছাড়া রয়েছে হিন্দু ও খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মালম্বী জনগণ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শক্ত পারিবারিক বন্ধনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা এদেশের প্রতিটি  শিশুই ধর্মীয় এক আবেশ নিয়ে বড় হয়। তন্মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম পরিবারগুলো প্রথমেই তাদের সন্তানদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ আল-কুরআন শিক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় আচার ও নীতিমালাকে অনুসরণ করেনা এমন পরিবারও তাদের সন্তানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের ব্যাপারে মনোযোগী হোন। যদিও পরিতাপের বিষয় হলো- আমাদের দেশের সাধারণ শিক্ষার কারিক্যুলামে ধর্মীয় গ্রন্থ বিশুদ্ধ করে শেখার কোন ধরণের পাঠ পরিকল্পনা নেই। যে কারণে অভিভাবকগণ নিজ উদ্যোগে গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে তাদের সন্তানদেরকে আল-কুরআন বিশুদ্ধভাবে শিখানোর প্রয়াস চালান। উক্ত পরিস্থিতিতে যেসব অভিভাবক সচেতনতার অভাবে কিংবা অন্য কোন বাস্তব সমস্যার কারণে নিজ উদ্যোগে তাদের সন্তানদের কুরআন শিখানোর ব্যবস্থা করতে পারেন না সেসব শিশুরা পরিপূর্ণভাবে অজ্ঞ থাকে। আর যারা নিজ উদ্যোগে শিখানোর ব্যবস্থা করেন তাদের সন্তানদের অবস্থা কয়েক ভাগে বিভক্ত। কিছু অংশ ভালভাবে শিখতেই পারেননা আর কিছু অংশ ভালভাবে শিখে কিন্তু পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষার সাথে কুরআনের কোন ধরণের সম্পর্ক না থাকায় শিক্ষার্থীরা শৈশবের পাঠকে ভুলে যায়। আর ক্ষদ্র একটি অংশ রয়েছে, যারা শৈশবের পাঠকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে।

তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার কারিক্যুলামের বাহিরে আমাদের দেশে শিক্ষার আরো দুইটি প্রসিদ্ধ ধারা আছে। এক. আলিয়া কারিক্যুলাম দুই. কওমী কারিক্যুলাম। মোট শিক্ষার্থীর ১০ শতাংশ এই দুই ধারার কারিক্যুলামের সাথে সম্পৃক্ত।[1] এই দুইটি ধারায় কেবল বিশুদ্ধ কুরআন শিক্ষার যথাযথ পাঠ রয়েছে।

এবার মূল প্রসঙ্গ নিয়ে আলোকপাত করা যাক। সাধারণ শিক্ষা কারিক্যুলামের ৯০% শিক্ষার্থীদের মধ্যে অভিভাবকদের নিজস্ব উদ্যোগে যেসব শিশু কুরআন শিখার সাথে সম্পক্ত হয় এবং আলিয়া ও কওমী শিক্ষা কারিক্যুলামের ১০% শিক্ষার্থীদের কুরআন শিখার জন্য প্রথম যে আরবী পাঠ দেওয়া হয় তার ধরণ কেমন। বিদেশী ভাষা হিসেবে শিশুরা ইংরেজি শিখে কিন্তু বিদেশী ভাষা হিসেবে আরবী ভাষাকে তারা কিভাবে শিখছে তা নিয়েই বক্ষমাণ প্রবন্ধ।

বাংলাদেশী শিশুদের বিদেশী ভাষা শিক্ষাগ্রহণ:

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত মাতৃভাষার সাথে দুইটি ভাষাকে বিদেশী ভাষা হিসেবে শিক্ষাগ্রহণ করে। তন্মধ্যে একটি ইংরেজি; অন্যটি হলো আরবী। ইংরেজি ভাষা শিক্ষাগ্রহণ করার পেছনে প্রেষণা হিসেবে কাজ করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় সকল পরিমণ্ডলে ইংরেজি ভাষার আধিপত্যের কারণে। যেমন: রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি, চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও বিনোদনসহ ইত্যাদি সর্বস্তরেই ইংরেজি ভাষা অগ্রগণ্য। অপরদিকে আরবী ভাষা শিক্ষার পেছনে অধীকাংশ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মূল প্রেষণা হলো ধর্মীয় গুরুত্ব। কারণ, যেহেতু মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআনের ভাষা হলো আরবী।[2] তাই, কেবল ধর্মীয় অনুভূতি থেকেই সাধারণত অধিকাংশ মুসলিম অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে বিদেশী ভাষা হিসেবে আরবীকে শিখানোর প্রয়াস চালান।

আরবী ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতি:

বাংলাদেশের শিশুরা বিদেশী ভাষা হিসেবে দুটি ভাষা তথা আরবী ও ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষাগ্রহণ করলেও দুটি ভাষা দুই পদ্ধতিতে শিক্ষাগ্রহণ করে থাকে। শুধু তাই নয় ভাষা শিক্ষার প্রাথমিক পাঠই শুরু হয় ভিন্ন পদ্ধতিতে। ভিন্ন পদ্ধতি হওয়ার অন্যতম তিনটি কারণের মধ্যে একটি হলো দুটি ভাষা শিক্ষার দুটি ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে তথা উদ্দেশ্যগত ভিন্নতা। দ্বিতীয়ত, দুটি ভাষা শিক্ষার সীমা নির্ধারণের ভিন্নতা। তৃতীয়ত, শিশুদের আরবী শিক্ষার প্রাথমিক স্তরের জন্য সুপরিকল্পিত ও সমৃদ্ধ কোন পাঠ না থাকা। উক্ত তিনটি প্রধান কারণে শিশুরা দুটি বিদেশী ভাষার পাঠ গ্রহণ করলেও দুটি পাঠ গ্রহণ করার পদ্ধতি হয় সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং ফলাফলও ভিন্ন হয়। উল্লেখিত তিনটি কারণ নিম্নে পৃথকভাবে বর্ণিত হলো:

এক. উদ্দেশ্যগত ভিন্নতা: পূর্বেই এই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইংরেজী ভাষা শিক্ষাগ্রহণ করে বৈষ্যিক প্রয়োজনে আর আরবী ভাষাকে বাংলাদেশী শিশুরা শিক্ষাগ্রহণ করে ধর্মীয় কারণে। উক্ত উদ্দেশ্যগত ভিন্নতার কারণে দুটি ভাষা ভিন্ন দুটি পদ্ধতিতে শিক্ষাগ্রহণ করে।

দুই. উপরোক্ত এক নং কারণে দু্ইটি ভাষার শিক্ষার সীমা নির্ধারণেও ভিন্নতা চলে আসে। যেমন: ইংরেজি ভাষা শিক্ষাগ্রহণ করার ক্ষেত্রে একটি শিশুকে ধীরে ধীরে ভাষার চারটি দক্ষতা (যেমন: শুনে বুঝা, বলতে পারা, পড়ে বুঝা ও লিখতে পারা) অর্জনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অপরদিকে আরবী ভাষার ক্ষেত্রে একটি শিশুকে শুধু ভাষার একটি দক্ষতার (পড়ে বুঝা) দিকেই নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ, যেহেতু আরবী ভাষা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো- প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ (কুরআন) পড়তে সক্ষম হওয়া। তাই শিশুদেরকে ততটুকু পাঠই দেওয়া হয় যতটুকু পাঠ গ্রহণ করলে সে বিশুদ্ধভাবে কুরআন পড়তে সক্ষম হবে। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- এক্ষেত্রে আরবী ভাষা শিক্ষার উপরোক্ত প্রয়োজনীয়তার আলোকে দাবি হলো ভাষা একটি দক্ষতা তথা পড়ে বুঝার পাঠ সরবরাহ করা কিন্তু আমাদের দেশের শিশুদের আরবী শিক্ষার জন্য এমন পাঠ দেওয়া হয় যেখানে শিশুরা শুধু বিশুদ্ধ করে পড়তে পারবে কিন্তু ভাষার কিছুই বুঝতে পারবেনা। এই অবস্থায়, ভাষার একটি দক্ষতা তথা ’পড়ে বুঝা’ যেমন হচ্ছেনা এবং আরবী শিক্ষার একমাত্র প্রয়োজনীয়তা ধর্মীয় কারণ তথা কুরআন বুঝা সেটাও বিন্দুমাত্র বাস্তবায়ন হচ্ছেনা।

তিন. আরবী শিক্ষার প্রাথমিক স্তরের জন্য সুপরিকল্পিত পাঠের অভাব:

প্রয়োজনীয়তার আলোকে ইংরেজি ভাষার তুলনায় আরবী ভাষা শিক্ষাকে চার ভাগের এক ভাগে উপনীত করা হয়েছে। তথা চার দক্ষতার শুধু এক দক্ষতা শিখানোই মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু এই এক দক্ষতাও মোটেই শিখনো হয়না সুপরিকল্পিত পাঠের অভাবে। শুধু বিশুদ্ধভাবে পড়াকে রিডিং স্কিল তথা পঠন দক্ষতা বলা হয়না।[3] পঠন দক্ষতা বলতে বুঝায় পাঠ করে পূর্ণভাবে বুঝতে পারা। যা শিশুদের আরবী পাঠে শতভাগ অনুপস্থিত। যার ফলে আরবী শিক্ষার মূল প্রয়োজন ধর্মীয় গ্রন্থ পড়া তথা পড়ে বুঝতে পারা সেটা নব্বই শতাংশ বাস্তবায়ন হয়না। কারণ, কুরআন বিশুদ্ধ পাঠ করলে সাওয়াব রয়েছে কিন্তু মুসলিম ধর্মমতানুযায়ী কুরআন পাঠ করে সাওয়াব অর্জন করা একজন মুসলিমের মুখ্য উদ্দেশ্য নয় বরং কুরআন পাঠ করে তা অনুধাবন করা ও বুঝা হলো ইসলাম ধর্মের মূল দাবি।

শিশুদের আরবী পাঠ ও ইংরেজি পাঠের তুলনামূলক বিশ্লেষণ:

ইতিমধ্যেই আরবী ও ইংরেজি পাঠের ভিন্নতা ও তার কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এখন দুই বিষয়ের তুলনামূলক চিত্র নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

ইংরেজি পাঠের ধরণ:

প্রথমে শিশুদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে বর্ণমালা শিখানো হয়;

বর্ণমালা শিখানোর সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়;

বর্ণের সাথে সংশ্লিষ্ট বর্ণ দিয়ে গঠিত একটি শব্দ শেখানো হয়;

অতপর বর্ণের সংযোগ ও সংযুক্ত বর্ণগুলোকে উচ্চারণ করতে শেখানো হয়;

এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, বর্ণ শিখনোর সময় যে শব্দ শিখানো সেই শব্দের অর্থ পাশাপাশি শিখানো হয় এটা হতে পারে ছবির মাধ্যমে কিংবা সরাসরি মাতৃভাষার মাধ্যমে। এবং পরবর্তীতে যখন বর্ণকে সংযোগ করে ছোট ছোট করে শব্দ শিখানো হয় তখনও শব্দের অর্থ শিখানো হয়। শুধু তাই নয় ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার করে এই শব্দগুলোকে আরো বেশি সহজে আয়ত্ত্ব করার ব্যবস্থা করা হয়; যেন বাক্যগুলো শিশুরা নিজেরা নিজেদের কথাবার্তায় ব্যবহার করতে পারে। নিচে চিত্রের মাধ্যমে ইংরেজি পাঠ শুরুর ধরণ তুলে ধরা হলো-


আরবী পাঠের ধরণ:

ইংরেজির ন্যায় আরবী পাঠও কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। যেমন:

প্রথমে শিশুদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে বিশুদ্ধভাবে বর্ণমালা শিখানো হয়;

বর্ণমালা শিখানোর সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়;

বর্ণের সাথে সংশ্লিষ্ট বর্ণ দিয়ে গঠিত একটি শব্দ শেখানো হয়;

অতপর বর্ণের সংযোগ ও সংযুক্ত বর্ণগুলোকে উচ্চারণ করতে শেখানো হয়;

অতপর হরকত (যবর, যের ও পেশ), তানভীন, সাকিন, তাশদিন, মাদ্দ (টেনে পড়া) এই পাঠগুলোর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে বিশুদ্ধ আরবী পড়ার জন্য যোগ্য করে তুলা হয়। এক্ষেত্রে ইংরেজির সাথে মূল পার্থক্য হলো ইংরেজিতে যেমন শব্দ ও বাক্য পড়ানোর সময় অর্থসহ পড়ানো হয় সেখানে আরবী শব্দ ও বাক্য পড়ানোর সময় অর্থকে বুঝার কোন কৌশল বা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়না। যেমন নিচের মাধ্যমে আরবী পাঠের ধরণ তুলে ধরা হলো।

দ্বিতীয় ধাপ: এই ধাপে বর্ণের সংযোগ শিখানো হয়। বর্ণকে সংযোগ করার পর সংযুক্ত বর্ণগুলোকে পৃথকভাবে উচ্চারণ অনুশীলন করানো হয়। যেমন:

جمععمج
جعللعج
فتححتف
তৃতীয় ধাপ: এই ধাপে সংযুক্ত বর্ণগুলোর মধ্যে যথাক্রমে হরকত (যবর, যের ও পেশ), তানভীন, সাকিন, তাশদিন, মাদ্দ (টেনে পড়া) ব্যবহার করে শব্দের উচ্চারণ শিখানো হয়। যেমন:

উপরে বর্ণিত প্রধান ৩টি ধাপে আরবী পাঠ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এই পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল বিশুদ্ধভাবে আরবীকে পড়তে শিখে কিন্তু পড়ে বুঝার দক্ষতা ন্যূনতমও অর্জিত হয়না। তাই আরবী ভাষা শিখতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধভাবে আরবী পড়তে জানলেও পূর্ণাঙ্গ ভাষা শিখার সময় নতুনভাবে আবার গোড়া থেকে শুরু করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে একজন শিক্ষার্থী বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজীকে যতটা মনে প্রাণে ধারণ করে ততটা আরবী ভাষাকে ধারণ ও অনুভব করতে সক্ষম হয়না।

আরবী শিক্ষার প্রথম পাঠে চলমান পদ্ধতির সীমাবদ্ধতার সমাধান কল্পে আমাদের প্রস্তাবনা:

আমরা শুরুতেই আরবী ভাষা ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষার তুলনামূলক গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেছি। স্বাভাবিকভাবেই আরবী বুঝে পড়া থেকে ইংরেজি বুঝে পড়ার প্রয়োজনীয়তা বেশি হলেও আরবীর প্রথম পাঠকে যদি আমরা আধুনিক ভাষা শিক্ষা পদ্ধতির আলোকে প্রণয়ন করতে পারি তাহলে শিক্ষার্থীরা আরবীকেও শুরু থেকে বুঝে পড়ার আগ্রহ পাবে এবং আরবী ভাষা জানার মাধ্যমে একধাপ এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। অন্তত যে ধর্মীয় প্রয়োজনে আরবী শিখা হয় সেই প্রয়োজনটি যথাযথ পূরণ হবে। নিম্নে আমাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো।

১. প্রথম কথা হলো- চলমান ধাপকে একটু ঢেলে সাজালেই বিষয়টি সহজেই সমাধান করা সম্ভব;

২. ভাষার চারটি দক্ষতাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে পাঠ পরিকল্পনা করা;

৩. যদি শুধু পঠন দক্ষতাকেও ফোকাস করা হয় তাহলেও যেন পঠন দক্ষতার পূর্ণাঙ্গ রূপ পাঠ পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

৪. আধুনিক ভাষা শিক্ষা পদ্ধতির আলোকে ভাবপ্রকাশকারী ও স্পষ্ট ছবি ব্যবহার করে শব্দের অর্থ শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করা। যেন শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষার ব্যবহার ছাড়াই শব্দ বা বাক্যের অর্থ অনুধাবন করতে পারে।

উপরের প্রস্তাবনার আলোকে উদাহরণস্বরূপ নিচে একটি পাঠ তুলে ধরা হলো:

নিচের পাঠ থেকে শিক্ষার্থীরা আরবী বর্ণের বিভিন্ন রূপ শিখবে। বর্ণের বিভিন্ন রূপ চর্চার ক্ষেত্রে আধুনিক ভাষা শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করে স্পষ্ট ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একসাথে পড়া, লিখা ও শোনা ও বলার দক্ষতা অর্জন করবে। নিচের পাঠটি লক্ষ্য করি:

প্রতিটি পাঠের ফাঁকে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে ছোট ছোট বাক্যে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কথাবার্তা আরবী বলবেন। যেন শিক্ষার্থীরা আরবী ভাষার সাথে ব্যবহারিকভাবে অভ্যস্থ হয়ে উঠে।

উপরোক্ত পাঠের মাধ্যমে একটি শিশুর সামনে ভাষা শিক্ষার চারটি দক্ষতাকে সমানভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব।

রেফারেন্স:

[1] https://shorturl.at/nrGO7

[2] আল-কুরআন, ১২:২

[3] https://study.com/academy/lesson/what-is-reading-definition-process.html

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More To Explore

Scroll to Top